ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​হাড় কাঁপানো শীতেও সুন্দরবনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৪-০১-২০২৫ ০৬:১৪:৪৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০১-২০২৫ ০৬:১৪:৪৭ অপরাহ্ন
​হাড় কাঁপানো শীতেও সুন্দরবনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড়
পৌষের শেষ ভাগে বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলা উপকূলে কনকনে শীতে কাঁপছে মানুষ। গত তিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তবে উল্টো চিত্র সুন্দরবনে। ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে পর্যটকরা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন দেখতে ছুটে এসেছেন। আসছেন বিদেশি পর্যটকরাও।

শুক্র ও শনি (৩ ও ৪ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির এ দুই দিনে সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্পট করমজলে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। আগত পর্যটকরা ট্রলার ও লঞ্চে করে বনের নানা প্রান্তে গিয়ে উপভোগ করেছেন সুন্দরবনের সৌন্দর্য। শনিবারও পর্যটকদের ভিড় সামলাতে বনরক্ষীদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে পর্যটনকেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান।

সুন্দরবনের করমজল পর্যটন স্পটে ঘুরতে আসা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রদিপ মহলদার বলেন, ‘অভিজ্ঞতা খুবই চমৎকার। শুধু বই পড়ে পড়ে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যায় না। আমরা এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না সুন্দরবন আসলেই কত সুন্দর! পরতে পরতে বৈচিত্র্য আমাদের হাতছানি দিয়েছে। অনেক কিছু শেখার আছে এখান থেকে।’

সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন স্কুলশিক্ষার্থী জানায়, সুন্দরবনে এসে তারা সবাই খুশি। ওয়াচ টাওয়ারে চড়ে তারা অনেক দূর পর্যন্ত সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছে।

উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা মীর আনোয়ার আলী বলেন, ‘আগে কখনও সুন্দরবনে আসা হয়নি। প্রথমবারের মতো প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে করমজলে এলাম। বনের ভেতর ঘুরে দেখলাম অনেক কিছু। মনটা ভরে গেছে।’

করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘দেশেজুড়ে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও এত পর্যটক আসবে, তা ভাবতে পারিনি। যেহেতু পর্যটক মৌসুম তাই পর্যটক আসবে। তাছাড়া টানা দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত সাত হাজার পর্যটক এসেছেন এখানে। তাই অন্য দিনের চেয়ে রাজস্ব ভালো আদায় হবে।’

 ‘রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভালো, তাই এখন থেকে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার পর্যটক আসবে। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের চাপ হবে’ উল্লেখ করে বন কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ‘চারদিকে ঘন সবুজ পরিবেশের মাঝে বুঁদ হয়ে থাকার নেশায় যেকোনও পর্যটকেরই পছন্দের স্থান সুন্দরবন। ভরা এই পর্যটক মৌসুমে সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হচ্ছেন বিদেশি পর্যটকরাও। শনিবার ইংল্যান্ড ও রাশিয়ার ১৬ জন পর্যটক এসেছেন। এর আগে বছরের প্রথম দিনে আটটি দেশের ৩৮ জন পর্যটক সুন্দরবন ঘুরে গেছেন।’

জানা গেছে, সুন্দরবনে সারি সারি সুন্দরী, পশুর, কেওড়া, গেওয়া ও গোলপাতা গাছ রয়েছে। দৃষ্টি যতদূর যায়, সবখানেই যেন কোনও শিল্পী সবুজ অরণ্য তৈরি করে রেখেছেন। অপরূপ চিত্রল হরিণের দল, বন মোরগের ডাক, বানরের চেঁচামেচি , মৌমাছির গুঞ্জন ও বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন। এসব বৈচিত্রময় কারণে বরাবরই বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের কদর আলাদা।

বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ